সোমবার, ৩ জুন ২০২৪

নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বকাপ আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশিত
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশিত : ৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:১৭

আর মাত্র কিছুদিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে ২০ ওভার ক্রিকেটের বিশ্ব মহারণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারই প্রথমবারের মতো ২০টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফর‌ম্যাটের বিশ্বকাপ। জুনে এবারের আসর মাঠে গড়াবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগেই দুঃসংবাদ শুনতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে। ব্যবস্থাপনাজনিত অনিয়মের কারণে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ড (ইউএসএসি)।

যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক অ্যান্ড প্যারালিম্পিক কমিটি (ইউএসওপিসি) যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের চলমান পরিস্থিতিতে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। একই কারণে ক্ষুব্ধ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও। ক্রিকবাজ জানিয়েছে, আইসিসি পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর বড় একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ডকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে।

ইউএসএসির চলমান অস্থিরতার কারণ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুর মুরাদের অব্যাহতি। মুরাদকে প্রধান নির্বাহী হিসেবে আইসিসিই সুপারিশ করেছিল। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাকি থাকতে তাকে সরিয়ে দেওয়ায় আইসিসি পুনর্বহাল করতে বলেছিল। কিন্তু ইউএসএ ক্রিকেটের পরিচালনা পর্ষদ সে নির্দেশনায়ও কর্ণপাত করেনি।

অলিম্পিক কমিটি মনে করে, ইউএসএসির বোর্ড পরিচালকেরা বোর্ডের দৈনন্দিন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছেন। নুর মুরাদকে সরিয়ে দেওয়া যার সর্বশেষ নজির। গত ১৫ মার্চ বোর্ড মিটিংয়ের পর আইসিসিও ইউএসএ ক্রিকেটকে শৃঙ্খলা বহালের বিষয়ে কড়া সতর্কতা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ডের এমন আচরণে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর বড় একটি অংশ তাদের নিষিদ্ধ করার পক্ষে। তবে বিশ্বকাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন তারা।


হাতে ৬ সেলাই: বিশ্বকাপে অনিশ্চিত শরিফুল  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ আগামী ৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তার আগে নিজেদের শেষবারের মতো ঝালিয়ে নিতে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। বোলিং মোটামুটি ভালো করলেও আবারও ব্যাটারদের ব্যর্থতা ফুটে উঠলো। এ ম্যাচে ৬০ রানে হেরেছে টাইগাররা। তবে জয়-পরাজয়ের হিসেব ছাড়িয়ে বাংলাদেশের জন্য বড় দুঃসংবাদ হয়ে এসেছে পেসার শরিফুল ইসলামের ইনজুরি। ভারতের ইনিংসের শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার শট ঠেকাতে গিয়ে হাতে চোট পান শরিফুল। ম্যাচ শেষে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে।

শরীফুলের চোটের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ দলের চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেছেন, ‘শরীফুলের তর্জনী ও মধ্যমার মাঝে যে জায়গা, সেখানে একটা স্প্লিট ইনজুরি হয়েছে। নাসাউ ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারে হ্যান্ড সার্জনের তত্ত্বাবধানে ওর ক্ষতস্থানে ছয়টা সেলাই পড়েছে। আমরা দুদিন পর আবার হ্যান্ড সার্জনের কাছে যাব। তখন আমরা আসলে বুঝতে পারব যে ওর ফিরতে কত সময় লাগবে।’ এখনো চোট কাটিয়ে খেলা হয়নি আরেকে পেসার তাসকিন আহমেদেরও। তার বিকল্প হিসেবে ট্রাভলিং রিজার্ভ হয়ে দলের সঙ্গে আছেন হাসান মাহমুদ। কিন্তু এখন শরিফুল ইনজুরিতে পড়লে ভাবনা বাড়বে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজম্যান্টের। পুরো টুর্নামেন্টেই শরিফুল সুস্থ হয়ে উঠতে না পারলে হাসানকে যুক্ত করা হতে পারে ১৫ জনের স্কোয়াডে। এখনো অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে শরিফুলের চোট নিয়ে কিছু জানায়নি বিসিবি।


যুবরাজের চোখে বাংলাদেশ বিপজ্জনক দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

রান উৎসবের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের আসরে সর্বোচ্চ ২০টি দল অংশগ্রহণ করছে। বিশ্বকাপে দলগুলোর শক্তি-দুর্বলতা নিয়ে কাটা-ছেঁড়া শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। তবে সেই আলোচনায় বাংলাদেশের নাম খুব একটা খুঁজে পাওাঁ যায় না। সেই আলোচনায় বাংলাদেশের নাম যুক্তও করতে পারেনি সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। বিশ্বকাপে উড়াল দেওয়ার সময় অধিনায়ক শান্তও বলেছিলেন খুব বেশি আশা না করতে। সুপার এইটে খেলার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া টাইগারদের নিয়ে কথা বলেছেন সাবেক ক্রিকেটার যুবরাজ সিং।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরে আইসিসির শুভেচ্ছাদূত হয়েছেন সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং। বিভিন্ন দলের বিষয়ে মন্তব্য করার একপর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেন।

গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে যুবরাজ বলেন, ‘বাংলাদেশের সম্ভাবনা আছে। তারা খুবই বিপজ্জনক দল। আগেও বেশ কিছু অঘটন ঘটিয়েছে তারা। তবে বিশ্বকাপ জিততে হলে আপনাকে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে হবে। যা বাংলাদেশ করতে পারছে বলে আমি দেখিনি। আমার মনে হয় তাদের সেই সামর্থ্য আছে। আপনাদের অপেক্ষা (কী ঘটে দেখার জন্য) করতে হবে এবং দেখতে হবে।’

ক্রিকেটের উত্তেজনাপূর্ণ এ সংস্করণে নিজের ফেভারিট দলকেও বেছে নিয়েছেন সাবেক এ ভারতীয় তারকা। জানিয়েছেন তার সেমিফাইনালিস্ট দলের তালিকা। তিনি বলেন, ‘ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান এবং নো অস্ট্রেলিয়ানন্স (অস্ট্রেলিয়া বাদে অন্য কোনো দল)।’

তবে যুবরাজের চোখ এখন আগামী ৯ জুন গ্রুপ পর্বের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিকে, ‘আমি সে দিকেই তাকিয়ে আছি। আসলে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ কখনো (মাঠে এসে) দেখিনি। আমি খেলেছি এমন ম্যাচ আছে, আর টিভিতে দেখেছি। মাঠে এসে এবারই প্রথম দেখব। চাপটা কেমন তাই জানি না।’

তবে এবারের বিশ্বকাপে যুবরাজ সিং চ্যাম্পিয়নের ট্রফি দেখছেন ভারতের হাতেই। সাবেক এ তারকা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের বড় টুর্নামেন্ট জেতার আত্মবিশ্বাস আছে। ভারত যদি নিজের ওপর বিশ্বাস রাখে এবং তারা যদি তাদের পূর্ণ সামর্থ্য অনুযায়ী খেলে, তাহলে শিরোপা জিততে পারে। ভারত আইসিসি ট্রফি জিতেছে অনেক দিন হয়ে গেছে। আশা করছি এবার আমাদের দল এই অপেক্ষার অবসান ঘটাবে। আমার প্রত্যাশা (ফাইনালে খেলবে) ভারত এবং সম্ভবত ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা পাকিস্তান, তবে অস্ট্রেলিয়া নয়।’

বিশ্বকাপের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রে এখনো ক্রিকেট সেভাবে জনপ্রিয় নয়, মেগা আসরেও সেভাবে দেশটিতে উন্মাদনার কথা সামনে আসছে না। তবে যুবরাজ জানালেন ভিন্ন কথা, ‘এখানে (আমেরিকা) ক্রিকেটটা খুব ভালোভাবেই জনপ্রিয় হচ্ছে। তারা খুব ভালো আয়োজন করেছে এবং এখন পর্যন্ত সব ঠিকঠাক লাগছে।’


ধুন্ধুমার লড়াই হবে দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

আধুনিক টি-টোয়েন্টির যে ধারা কিংবা যে রং তার সবটাই দেখা গেল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে। রানের ফোয়ারা ফোটালেন ব্যাটাররা। বোলাররাও চেষ্টা করলেন সাধ্যমতো চেপে ধরার। তছনছ হলো রেকর্ড বই। মাঠের পারফরম্যান্সে ষোলোআনাই ঠিকঠাক বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। দর্শকদের জন্যও পয়সা উসুল একটা ম্যাচ।

আধুনিক ক্রিকেটে নিজেদের শক্তিশালী আবির্ভাবের জানানটাও দিল স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এ পারফরম্যান্সকে অঘটন কিংবা নিছকই একটা ম্যাচের পারফরম্যান্স বলার সুযোগ নেই। গত কিছুদিন আগে থেকেই তারা দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। কিছুদিন আগেই কানাডাকে হারিয়েছে ৪-০ ব্যবধানে, বাংলাদেশকে হারিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। সেটাই টেনে নিয়ে এসেছে বিশ্বকাপে।

প্রথম ম্যাচেই রেকর্ড বইয়ে উল্টে-পাল্টে গেছে কয়েকটি অধ্যায়। প্রথমে ব্যাট করে কানাডা করে ১৯৪ রান। যেটা ছিল আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটি ছিল নেদারল্যান্ডসের। ২০১৪ বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৩ রান করেছিল তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে সেটা ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল যুক্তরাষ্ট্র। তারা করল ১৯৭ রান।

ব্যক্তিগত রেকর্ডেও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটার অ্যারন জোন্স নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। ২২ বলে তিনি পূরণ করেছিলেন অর্ধশতক। এরপর অপরাজিত থেকেছেন ৯৮ রানে। বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচে তার চেয়ে বেশি রান আছে কেবল ক্রিস গেইলের।

বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচে সকাল সাড়ে ছয়টায় মাঠে নামবে আইসিসির অন্য দুই সহযোগী দল ওমান আর নামিবিয়া। গ্রুপ বি-এর দুর্বলতম দুই দল তারা। স্বাভাবিকভাবেই এ ম্যাচ নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। কারণ গ্রুপ বি-এর ফেভারিট অন্যতম দুই পরাশক্তি ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া। সুপার এইটে যেহেতু কোয়ালিফাই করবে প্রতি গ্রুপ থেকে দুটি দল, তাই তাদের সেই সম্ভাবনা খুবই কম।

তবে বিশ্বকাপের চতুর্থ ম্যাচ হতে যাচ্ছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ ম্যাচে গ্রুপ ‘ডি’ থেকে মাঠে নামছে শ্রীলঙ্কা আর দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। এ গ্রুপেই অবস্থান বাংলাদেশেরও। বিশ্বকাপের গ্রুপ অব ডেথও বলা হচ্ছে এটাকেই। এ ম্যাচে যারা জিতবে তারাই এগিয়ে থাকবে সুপার এইটে কোয়ালিফাই করার দৌড়ে।

টি-টোয়েন্টি নির্দিষ্ট একটি দিনের খেলা। অনেক সময়ই বলা হয়, এখানে ছোট দল বড় দল বলে কিছু্ নেই। তাই নির্দিষ্ট করে কোনো দলকেই এগিয়ে রাখা যায় না। তবুও খাতা-কলমের হিসাব কিংবা অতীত ইতিহাসও ফেলে দেওয়া যায় না।

আইসিসির টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকাই। সেখানে খুব বেশি পার্থক্য নেই। প্রোটিয়াদের অবস্থান সাত আর লঙ্কানদের অবস্থান আট।

সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে দারুণ ছন্দে আছে লঙ্কানরা। এ বছর তিনটি সিরিজে মাঠে নেমেছিল তারা। জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন সিরিজই ২-১ ব্যবধানে জিতেছে লঙ্কানরা। তবে বিশ্বকাপের আগে পচা শামুকে পা কেটেছিল লঙ্কানদের। ২০ রানে হেরেছিল নেদারল্যান্ডসের কাছে। তবে সেটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না লঙ্কানরা।

তবে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে সতর্ক শ্রীলঙ্কা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জিততে হলে তিন বিভাগেই ভালো খেলতে চান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

লঙ্কানদের এবারের দলটা অভিজ্ঞ আর তারুণ্যে মিশেল। দলে আছেন সাবেক দুই অধিনায়ক অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও দাসুন শানাকার। সঙ্গে আছেন টেস্ট দলের অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাও। টপ অর্ডারে থাকছেন কুশল মেন্ডিস, পাথুম নিশাঙ্কা, কামিন্দু মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ও সাদিরা সামারাবিক্রমার মতো তারকারা। পেস আক্রমণে থাকছেন মাথিশা পাতিরানা, দিলশান মাদুশঙ্কা, দুষ্মন্ত চামিরা ও নুয়ান থুশারা। হাসারাঙ্গার সঙ্গে স্পিনে রাখা হয়েছে তরুণ দুনিথ ওয়েলালাগেকে।

অন্যদিকে প্রোটিয়াদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আশাজাগানিয়া নয়। এ বছর মাত্র একটি সিরিজ খেলেছে প্রোটিয়ারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নেমে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে তারা।

তবে প্রোটিয়াদের আশার কথা হলো দারুণ ছন্দে আছে ব্যাটাররা। আইপিএলে রানের ফুলঝুরি ফুটিয়েছেন এইডেন মার্করাম, হেনরি ক্লাসেন, কুইন্টন ডি ককরা। ডেভিড মিলার ও ট্রিস্টান স্টাবসদের নিয়ে গড়া তাদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ।

দলের স্পিন বিভাগ সামলাবেন কেশব মহারাজ, বিয়র্ন ফরচুইন ও তাবরাইজ শামসি। দলে একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন মার্কো জানসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পেস আক্রমণে আছেন কাগিসো রাবাদা, জেরাল্ডে কোয়েৎজি, পেসার অটনিল বার্টম্যান ও এনরিখ নরকিয়া।

এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ১৭ বার মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে প্রোটিয়াদের জয় ১১টিতে এবং লঙ্কানদের জয় ৫টিতে। একটি ম্যাচ ড্র হয়। ড্র হওয়া ম্যাচে সুপার ওভারে জয় পায় প্রোটিয়ারা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চারবার দেখা হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার। এখানেও জয়ের পাল্লা ভারী প্রোটিয়াদের। ৩টিতে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শ্রীলঙ্কার জয় একটিতে।


রেকর্ড বই তছনছ করে বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম জয়

আপডেটেড ২ জুন, ২০২৪ ২২:৩৬
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বলতে যা বোঝায় তার সবটাই বিদ্যমান। চার-ছক্কার ফুলঝুরি; ব্যাট-বলের ধুন্ধুমার লড়াই আর রেকর্ড ভাঙতে নতুন রেকর্ড তৈরি। এভাবেই মাঠে গড়াল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। উদ্বোধনী ম্যাচে মখোমুখি আইসিসির দুই সহযোগী দেশ। কিন্তু মাঠের খেলায় সেটা আর বোঝার কোনো উপায় রাখল না তারা।

শুরুতে ব্যাট করে কানাডা গড়ল অপ্রত্যাশিত রেকর্ড। সেটা ভাঙতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে গড়তে হবে আরেকটি রেকর্ড। কিন্তু তাতে কী আসে যায়, রেকর্ড তৈরিই তো হয় ভাঙার জন্য। মাঠের পারফরম্যান্সে সেটাই জানান দিল স্বাগতিকরা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই ছিল দুই দলের অভিষেক ম্যাচ। কিন্তু এ ম্যাচেই তারা যেটা করল সেটাকে কিছুটা অবিশ্বাস্য বলা যেতেই পারে। সেই সঙ্গে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাখল ভারত-পাকিস্তানকে।

শুরুতে ব্যাট করে ১৯৪ রানের পাহাড়সম পুঁজি দাঁড় করায় কানাডা। সেটার ভিত স্থাপন করে দেয় দুই ওপেনার অ্যারন জনসন ও নবনীত ঢালিওয়াল। জনসন ২৩ রানে আউট হলেও টুর্নামেন্টের প্রথম ফিফটি করেন ঢালিওয়াল (৬১)। এরপর আউট হন কোরি অ্যান্ডারসনের বলে। তবে ২৮ বলে ফিফটি করে রান ঠিকই বাড়াতে থাকেন কার্টন। শেষদিকে শ্রেয়াস মোভার ১৬ বলে ৩২ রানের ইনিংসে ১৯৪ রানের সংগ্রহ পায় কানাডা।

বিশ্বকাপে আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে এটাই ছিল সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটি ছিল নেদারল্যান্ডসের। ২০১৪ বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৩ রান করেছিল তারা।

দ্বিতীয় ইনিংসে কানাডার সেই রেকর্ডও ভেঙে দিল যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৫ রানের লক্ষ্য তারা পেরিয়ে গেল ১৪ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখেই। যুক্তরাষ্ট্র করল ১৯৭ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সহযোগী দেশ হিসেবে এটাই এখন সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

অথচ ম্যাচে হওয়ার কথা ছিল ভিন্ন কিছু। ব্যাটিংয়ের মতো বল হাতেও দারুণ শুরু পেয়েছিল কানাডা। প্রথম ৭ ওভারে মাত্র ৪৫ রান দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ২ উইকেট তুলে নিয়েছিল তারা। যুক্তরাষ্ট্রের সামনে তখন শেষ ১২ ওভারে ১৪৭ রানের সমীকরণ।

যুক্তরাষ্ট্রকে এমন অবিশ্বাস্য ম্যাচ জেতানোর নায়ক সহ-অধিনায়ক অ্যারন জোন্স। দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর চার নম্বরে ব্যাট করতে নামেন জোন্স। এরপর উইকেটে তিনি যে তাণ্ডব শুরু করলেন সেটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না কানাডার বোলাররা। মাত্র ২২ বল থেকেই তুলে নেন অর্ধশতক। তার ব্যাটের মেজাজ তখনও শান্ত হয়নি। তাণ্ডব চলল এরপরও। ৪০ বলে খেললেন ৯৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। শেষে হয়তো তিনি কিছুটা আফসোসই করেছেন, কানাডা যদি আরও কয়টা রান করত সেঞ্চুরিটা করতে পারতাম।

জোন্সকে যোগ্য সঙ্গ দেন তিন নম্বরে খেলা আন্দ্রিস গুস। ইনিংসের প্রথম ২৫ বলে ২৫ রান করা গুস ফিফটি করেন ৩৯ বলে। এই দুজনে গড়েন ৫৮ বলে ১৩১ রানের অবিশ্বাস্য জুটি। ওভারপ্রতি এই জুটি তুলেছে ১৪.২৯ রান করে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শতরানের জুটিতে এর চেয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলতে পারেনি আর কোনো জুটি। ৪৬ বলে ৬৫ রান করে আউট হন গুস।

টি-টোয়েন্টিতে এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ছিল ১৬৯। ভেঙেছেন সেই রেকর্ড। পাশাপাশি নাম লিখিয়েছেন আরেকটি রেকর্ডে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও এটি।


নিখুঁত ইয়র্কারের রহস্য জানালেন বুমরা  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

বর্তমান সময়ে ব্যাটারদের কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম জাসপ্রিত বুমরা। বিশেষ করে বুমরার ইয়র্কার খেলা যেকোনো ব্যাটারের জন্যই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। ডেথ ওভারের অন্যতম কিপটে বোলার তিনি। চাইলেন অনায়াসে ওভারের ৩ থেকে ৪টি ইয়র্কার করতে পারেন তিনি। আর সেগুলোর পারফেকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই।

২০২৩ সাল থেকে প্রায় ১১ মাস ইনজুরিতে ছিলেন বুমরাহ। স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘ সময়ের ইনজুরি থেকে ফেরার পর পেস বোলারদের আগের সেই ফর্ম থাকে না। কিন্তু বুমরা যেন পুরোটাই উল্টো। একটুও কমেনি তার বলের ধার। কীভাবে শিখলেন বুমরা এমন পারফেক্ট ইয়র্কার, আর কীভাবেই বা নিজেকে ফিরে পেলেন সেসব জানিয়েছেন আইসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে।

আইসিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৩০ বছর বয়সি তারকা ফাস্ট বোলার বলেছেন, ‘যেহেতু আমাকে চোটের ধাক্কা কাটিয়ে আসতে হয়েছে, তাই যতটা সম্ভব খেলাটিকে উপভোগ করার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। কিছু জিনিস আমার পক্ষে যাবে, কিছু জিনিস পক্ষে যাবে না। ম্যাচ ঘিরে মনে এমন নানা ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। আমি সেটা বাদ দিয়ে প্রক্রিয়া ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি।’

নিজের নিখুঁত ইয়র্কারের আয়ত্তের গল্পও শোনালেন বুমরাহ, ‘বাড়ন্ত বয়সে আমি টেনিস বল ও রাবার বল দিয়ে অনেক খেলেছি, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময়ে বন্ধুদের সঙ্গে খেলে খেলে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। তখন আমার মনে হতো উইকেট শিকারের এটাই (ইয়র্কার) একমাত্র উপায়। আমি ফাস্ট বোলিংয়ের বড় ভক্তও ছিলাম। টেলিভিশনে ফাস্ট বোলারদের (ইয়র্কার) দেখে মুগ্ধ হয়ে যেতাম। আমিও সে রকম কিছু করার চেষ্টা করতাম। টেনিস বল বা রাবার বলই আমার ইয়র্কার শেখার রহস্য কি না, জানি না। কিন্তু প্রতিনিয়ত অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার কারণেই আমি ইয়র্কার ভালোভাবে রপ্ত করতে পেরেছি।’

আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে ৭৪ উইকেট নিয়ে বর্তমানে এই সংস্করণে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বুমরা। তাঁর ওপরে আছেন লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল (৯৬ উইকেট) ও অভিজ্ঞ পেসার ভুবনেশ্বর কুমার (৯০ উইকেট)। ভুবনেশ্বর দেড় বছর হলো ভারতীয় দলে উপেক্ষিত। আরেক অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শামিও চোটের কারণে নেই এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তাই বুমরার ওপরই বাড়তি দায়িত্ব বর্তাবে।


অস্ট্রেলিয়ার নতুন সূর্য মার্নাস লাবুশেন  

আপডেটেড ২ জুন, ২০২৪ ১৩:৩৪
ক্রীড়া প্রতিবেদক

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের নতুন সূর্য মার্নাস লাবুশেন। অজিদের নায়ক এখন তিনি। তাকে বলা হয় লাল বলের শৈল্পিক ব্যাটার। নিজের প্রতীভা দিয়ে জয় করে নিয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের মন। অস্ট্রেলিয়ার তিন নম্বর পজিশনটা এখন তার জন্য রিজার্ভ করা। তাকে জায়গা ছেড়ে দিতে হয়েছে স্টিভেন স্মিথকে। স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে নিজেকে অজিদের ব্যাটিং-স্তম্ভ হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তিনি ঠিক অস্ট্রেলিয়ান ছিলেন না; তারপরও অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের প্রতিশব্দ। তিনি ঠিক টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন না; তারপরও বিশ্বের সেরা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। তিনি ঠিক স্টিভেন স্মিথ নন; তারপরও তাকে লোকে স্মিথের ক্লোন বলছে!

১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লার্কসড্রপ শহরে জন্ম লাবুশেনের। আফ্রিকান বাবা-মায়ের সঙ্গে সেখানেই বেড়ে ওঠা। কোনো শেকড় টেকড়ের টানে নয়, ভাগ্যের সন্ধ্যানে অস্ট্রেলিয়ায় চলে এসেছিলো লাবুশেন পরিবার। এখানে লাবুশেন ক্রিকেট শুরু করলেন। সমস্যা হলো, তিনি ইংরেজি বলতে পারতেন না। ফলে সতীর্থদের সাথে যোগাযোগ কষ্ট হতো। অবশ্য সেটা সামলে নিলেন; কারন তিনি ক্রিকেট ভাষাটা তো জানতেন। ক্রিকেটের সবগুলো ভাষাই জানেন শুরু থেকে।

খুব ভালো ফিল্ডার, ভালো লেগস্পিনার এবং একটু ব্যাটিং পারে। মানে, লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার। ঠিক ধরেছেন, স্টিভেন স্মিথের মতোই। লোকে জানতো একটু ব্যাটিং পারেন। কিন্তু স্বীকৃত ক্রিকেটে এসে দেখা গেলো, লাবুশেন আসলে ব্যাটিংটাই সবচেয়ে ভালো পারেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ল্যাবুশেনের শুরুটা কুইন্সল্যান্ডের হয়ে ২০১৪ সালে। শুরুটা টপ অর্ডারেই ছিল; শুধু টপ অর্ডার নয়, রীতিমতো ওপেনার। এখানেই তিনি বিকশিত হতে থাকেন ব্যাটসম্যান হিসেবে। ফার্স্ট ক্লাস অভিষেকের ৪ বছরের মধ্যেই ডাক পান জাতীয় দলে।

২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে গায়ে জড়ান টেস্ট ক্রিকেটের জার্সি। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো না হলেও বল হাতে ছিলেন উজ্জ্বল। তার দুই বছর পর (২০২০ সালে) লাবুশেনের অভিষেক হয় ওয়ানডে ক্রিকেটে। আর তারও দুই বছর (২০২২ সালে) অভিষেক হয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। ক্যারিয়ারে মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে তার। তবে বাকি দুই ফরম্যাটে নিজেকে আস্থার প্রতীক হিসেবে চিনিয়েছেন লাবুশেন।

পুরো নাম: মার্নাস লাবুশেন

জন্ম: ২২ জুন, ১৯৯৪ সাল

জন্মস্থান: ক্লার্সড্রপ, উত্তর পশ্চিম, দক্ষিণ আফ্রিকা

রাশি: কর্কট

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট, গলফ, বাস্কেট বল

প্রিয় খাবার: ল্যাম্ব স্টেক

প্রিয় পানীয়: শ্যাম্পেইন

প্রিয় রং: কালো

প্রিয় ক্রিকেটার: জ্যাক ক্যালিস

প্রিয় ক্রিকেট দল: নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল

প্রিয় সতীর্থ: অ্যালেক্স ক্যারি, পিটার হ্যান্ডসকম

প্রিয় ফুটবলার: ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো

প্রিয় ফুটবল দল: রিয়াল মাদ্রিদ সিএফ

প্রিয় গাড়ি: ফোর্ড জিটি

প্রিয় স্টেডিয়াম: ব্রিজবেন ক্রিকেট গ্রাউন্ড

প্রিয় স্থান: সিডনি

প্রিয় শখ: মৎস শিকার, ভ্রমণ

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: কোকাবোরা


ক্যারিবীয় ধ্বংসাত্মক ব্যাটিংয়ের সামনে দুর্বল পাপুয়া নিউগিনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ক্রিকেটপ্রেমীদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটল। জাঁকজমকপূর্ণভাবে পর্দা উঠল ক্রিকেটের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ সংস্করণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। নতুন মোড়কে, নতুনত্ব নিয়ে হচ্ছে এবারের আসর। প্রথমবারের মতো চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নিচ্ছে ২০টি দল। বিশ্বকাপের আগের দিন নিউইয়র্ক সিটির শততালা উঁচু বিল্ডিংয়ে লেজার লাইট শো-এর মাধ্যমে জানান দেন বিশ্বকাপ শুরুর।

উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামছে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। তাদের প্রতিপক্ষ বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা কানাডা। ঘরের মাঠে স্বাগতিকদের চাওয়া থাকবে জয় দিয়ে শুরু করা। সে জন্য তাদের বড় শক্তি হবে ঘরের মাঠের দর্শক সমর্থন।

দুই দলের শক্তির বিচারে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রই এগিয়ে থাকবে কিছুটা। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান ১৯তম আর কানাডার অবস্থান ২৩তম। অভিজ্ঞতায়ও ভারী যুক্তরাষ্ট্রের ঝুলি। এ দলে খেলছে কোরি অ্যান্ডারসনদের মতো তারকা। আইপিএল মাতানো ক্রিকেটারও প্রতিনিধিত্ব করছে তাদের।

ব্যাটিংয়ে বেশ সলিড যুক্তরাষ্ট্র। টপ-অর্ডারে অধিনায়ক মোনানক প্যাটেলের সঙ্গে স্টিভেন টেইলর দারুণ সূচনা এনে দিতে পারেন। আর মিডল অর্ডারে দায়িত্ব নেওয়ার মতো যথেষ্ট দায়িত্বশীল কোরি অ্যান্ডারসন, অ্যারন জনসরা। শেষ দিকে ঝড় তোলার সক্ষতা প্রমাণ করেছে হারমিত শিং।

বোলিংয়েও বেশ শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্র। পেস বিভাগে নেতৃত্ব দেবেন আলী খান। স্পিনে স্টিভেন টেইলর। সব মিলিয়ে বেশ ব্যালেন্সড একটা দল যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পাঁচ দেখায় ৪টিতেই জয় যুক্তরাষ্ট্রের, বাকি একটি ভেস্তে গেছে বৃষ্টিতে। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে চমকে দেওয়ার সক্ষমতা আছে কানাডারও। বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে এসেছে তারা।

দিনের দ্বিতীয় খেলায় পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মাঠে নামবে আরেক স্বাগতিক দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়।

এ ম্যাচে যে একক আধিপত্য দেখাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। খাতা-কলমের হিসাবে যোজন যোজন এগিয়ে ক্যারিবীয়রা। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে রোভম্যান পাওয়েলের দলের অবস্থান চতুর্থ। বিপরীতে পাপুয়া নিউগিনির অবস্থান ১৬ ধাপ পিছিয়ে ২০তম। সুতরাং এটা থেকেই অনুমেয় যে, ম্যাচের চিত্র কেমন হতে যাচ্ছে। সেই শক্তিকে আরও বেশি জানান দেয় সবশেষ ম্যাচগুলো। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইট ওয়াশ করে ছেড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অস্ট্রেলিয়ার বোলাদের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে ম্যাচ জিতেছে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা বলা হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এবারের বিশ্বকাপেও তাদের দলে রয়েছে তেমনই কিছু ক্রিকেটার। আন্দ্রে রাসেল, নিকোলাস পুরান, ব্র্যান্ডন কিং, জনসন চার্লসদের মতো মারকুটে সব ব্যাটার। যারা নিজেদের দিনে যেকোনো বোলারের নাভিশ্বাস তুলতে পারে।

বোলিংয়েও পিছিয়ে নেই ক্যারিবীয়রা। পেসার ওবেদ ম্যাককয়, আলজারি জোসেফ, সামার জোসেফদের সঙ্গে স্পিনে রাজত্ব করবে আকিল হোসেন ও গুদাকেস মোতি।

তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বরাবরই শক্তির জায়গা অলরাউন্ডাররা। যারা ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বল হাতে আলো ছড়াতে পারেন। সেই তালিকায় থাকবেন আন্দ্রে রাসেল, রোমারিও শেফার্ড, রোভম্যান পাওয়েল, রস্টন চেজরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরেকটি শক্তির জায়গা লম্বা শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। পাওয়ার হিটিংয়ে দক্ষ ক্যারিবীয় ব্যাটাররা একজনই একটি ম্যাচ বের করে নেওয়ার সক্ষমতা রাখে।

প্রথম রাউন্ডে যেহেতু দুটি দল পরের রাউন্ডে কোয়ালিফাই করবে, তাই রান রেট বাড়িয়ে নিতে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ব্যাটিং তাণ্ডবই চালাতে চাইবে ক্যারিবীয়রা। তবে রান রেটের কথা মাথায় রখে টসে জিতলে স্বল্প রানে আটকে রাখতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত ম্যাচ শেষ করতে চাইবে তারা।


ভারতের বিপক্ষে টসে হেরে বোলিংয়ে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজেদের ঝালাই করে নিতে ভারতের বিপক্ষে ওয়ার্মআপ ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। নাসাউ স্টেডিয়ামের টসে হেরে বোলিং পেয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

৮ জুন শুরু হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। তার আগে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ। তবে সেই সুযোগ পাচ্ছেন না তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান। তাদের বিশ্রাম দিয়ে এ ম্যাচে খেলতে নামছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ওয়ার্মআপ ম্যাচ বিধায় বাকি সবাই হয়তো ভূমিকা অনুযায়ী ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ের সুযোগ পাবেন।

অন্যদিকে ভারতের হয়ে এ ম্যাচে খেলাচ্ছে না বিরাট কোহলি। একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখা কোহলির ভ্রমণক্লান্তি কাটাতেই হয়তো তাকে বিশ্রাম দিয়েছে টিম ইন্ডিয়া।

বাংলাদেশ দল

লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী, মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, শরিফুল ইসলাম, তানজিদ হাসান, তানজিম সাকিব ও তানভীর ইসলাম।

ভারত দল

রোহিত শর্মা, যশ্বসী জয়সওয়াল, সূর্যকুমার যাদব, সাঞ্জু স্যামসন, হার্দিক পান্ডিয়া, রিশভ পন্ত, শিভম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, আর্শদীপ সিং ও যুজবেন্দ্র চাহাল।


বাফুফের উদাসীনতায় হারিয়ে যাচ্ছেন কৃষ্ণা!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

গত কয়েক বছরে দেশের ফুটবলে যে অর্জন তার বেশির ভাগই নারীদের। আর এ অর্জনের সঙ্গে মিশে আছে একটি নাম; কৃষ্ণা রানী সরকার। ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা উঁচিয়ে ধরে বাংলার মেয়েরা। ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে দুটি গোল করে সে ইতিহাসে নিজের নাম লিপিবদ্ধ করেছেন এ ফরোয়ার্ড। কিন্তু এর পরই তিনি হারিয়ে গেছেন ফুটবল থেকে। সেটার পেছনে অবশ্য দায়ী বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।

২০১৪ সালে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন কৃষ্ণা। এরপর একটানা খেলে গেছেন ২০২২ সাল পর্যন্ত। তাই যোগ্যতা কিংবা অভিজ্ঞতার বিচারে কৃষ্ণার চেয়ে এগিয়ে কেবলই অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ খেলোয়াড় ইনজুরিতে দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকলেও নেই বাফুফের কার্যকর কোনো উদ্যোগ।

২০২২ সাফের পর থেকেই ইনজুরিতে কৃষ্ণা। পায়ের আঙুল শুকিয়ে আসে এ ফরোয়ার্ডের। তাই ব্যথা অনুভব করায় স্বাভাবিক অনুশীলন ও দৌড়াতে পারেন না। এ সমস্যা নিয়েই এক বছরের বেশি সময় কাটাচ্ছেন। ঝুঁকি নিয়েই এবার লিগে নাসরিন স্পোর্টস একাডেমির কিছু ম্যাচে খেলেছেন এবং গোলও করেছেন। তবে ঘরোয়া লিগে খেললেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার পরিস্থিতিতে নেই তিনি।

নারী দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের সাফ কথা, ‘সে পূর্ণাঙ্গ ফিট নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আনফিট খেলোয়াড় আমি নিতে পারি না।’

নিজের ইনজুরি নিয়ে গণমাধ্যমে কিছু না বললেও নিজের ফেসবুক পেজে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে নিজের মনের ক্ষোভ ঝেড়েছেন কৃষ্ণা। স্ট্যাটাসে কৃষ্ণা লেখেন, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেক দিন দেখেন, যখন ব্যথা কমতে ছিল না। স্যার বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া, ইন্ডিয়া গিয়ে ট্রিটমেন্ট করাতে। কিন্তু যখন আমি বাফুফেকে জানাই, তারা বলেন আরও কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেক দিন তাদেরকে ইন্ডিয়াতে যাওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু তারা আমার কথার কোনো গুরুত্ব দেননি। আজও পর্যন্ত ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি।

তবে ভিন্ন কথা বলেছেন বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, ‘ও একবার নিজেই ভারত যেতে চেয়েছিল। আমরা ভিসার ব্যাপারে সহায়তা করেছিলাম। ওকে ফিজিও প্রতিনিয়ত দেখছে এবং দেশীয় চিকিৎসকরা তত্ত্বাবধান করছেন।’

ফিজিও এবং দেশীয় চিকিৎসকদের অধীনে রেখে কৃষ্ণার কার্যত কোনো উন্নতি হচ্ছে না। তার বিদেশ যাওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়টি নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান অনুধাবন করলেও আর্থিক কারণে মূলত আড়ালের চেষ্টা। ফেডারেশনের কর্মকর্তারা অনেকেই বিত্তবান ও সচ্ছল। মাত্র কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে এই গুণী খেলোয়াড়ের চিকিৎসা করাতে না পারলে তাদের পদে থাকার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে এভাবে চলতে থাকলে নিজের হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন কৃষ্ণা।


আরেকটি বিশ্বকাপ খেলতে চান সাকিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

২০০৭ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ক্রিকেটের ছোট সংস্করণের বিশ্ব আসর; টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবার মাঠে গড়ানোর অপেক্ষায় নবম আসর। বিশ্বের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে সবগুলো আসরেই মাঠে নেমেছেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপের মঞ্চে সাকিবের পরিসংখ্যানও বেশ ভালো। সবমিলিয়ে বলা যায় ক্রিকেটের এ ফরম্যাটটাকে বেশ উপভোগই করেন তিনি।

সময়ের হিসাব বলছে সাকিবের বয়সটা পেরিয়েছে ৩৬। বিশ্বকাপের আরেকটা আসর আসতে বাকি আরও দুই বছর। এ সময়ে হয়তো অনেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার। তবে সাকিব খেলতে চান আরেকটি বিশ্বকাপ। বিসিবির ‘রেড-গ্রিন স্টোরি’তে জানালেন সেটাই।

হাসতে হাসতে সাকিব বলেন, ‘প্রথম বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যতগুলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হলো সবগুলোতেই অংশ নিতে পেরেছি। আমার জন্য এটা গর্বের ও আনন্দের। মাত্র দুজন খেলোয়াড়- আমি এবং রোহিত শর্মাই হয়তো সবগুলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছি। আশা করব আরও একটি বিশ্বকাপ যেন খেলতে পারি। তার আগে এই বিশ্বকাপে পারফরম্যান্সটা যেন ভালো থাকে। বাংলাদেশ যেন অন্যান্য যে কোনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চেয়ে ভালো ফল করে আসতে পারে।’

তবে বিশ্বকাপে ব্যক্তি সাকিবের তেমন কোনো লক্ষ্য নেই। দেশের হয়ে অবদান রাখাটাই তার মুখ্য বিষয়, ‘আমার নামের পাশে আমি কিছু দেখতে চাই না। একটি জিনিসই চাই যেন বাংলাদেশের হয়ে অবদান রাখতে পারি। এই বিশ্বকাপে যেন বাংলাদেশের হয়ে ভালো কিছু করতে পারি।’

বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের আবির্ভাবের ফলে অন্য দুই সংস্করণের চেয়ে টি-টোয়েন্টিই এখন দর্শকদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। এমন পরির্তনকে সাকিব কীভাবে দেখছেন? সে প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় এটা ওয়ানডেরই বর্ধিত সংস্করণ। ওভার কাটলে যেটা হতো সেটাই। অনেক রোমাঞ্চকর। দর্শকরা অনেক পছন্দ করেন। আমি একটি জিনিসই শুধু মনে করি যে, ব্যাট ও বলের যেন সমান প্রতিযোগিতা এখানে থাকে। যেকোনো একতরফা টুর্নামেন্টটা যেন না হয়। সাধারণত বিশ্বকাপে কখনোই সেটা হয় না। আমি মনে করি এবারও একই রকম হবে।’

গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের দুটি হবে যুক্তরাষ্ট্রে আর দুটি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। দর্শক সমর্থন নিয়ে সাকিব বলেন, ‘প্রচুর বাংলাদেশি দর্শক সেখানে অপেক্ষা করছে। আশা করি তারা পূর্ণ সমর্থন দেবে আমাদের। তাদের এই সমর্থন আমাদের কাজে আসবে এবং আমরা ভালো ফল পেতে সমর্থ হবো।’

কন্ডিশন নিয়ে সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, ‘এর আগে ফ্লোরিডায় যখন খেলেছি বাংলাদেশ ভালো করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আমরা সব সময়ই সুবিধা পাই। কারণ পিচগুলো অনেকটা আমাদের মতোই হয়ে থাকে। তাই আমি আশা করছি দুই জায়গাতেই আমরা সুবিধা পাব।’


পর্দা উঠছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

চার-ছক্কার ধুন্ধুমার লড়াই দেখার অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ক্রিকেটের সবচেয়ে উত্তেজনা ছড়ানো ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর্দা উঠছে আজ। প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামবে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডা। গ্র্যান্ড পেইরি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রোববার ভোর সাড়ে ৫টায়। দিনের দ্বিতীয় খেলায় আরেক স্বাগতিক দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাঠে নামবে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। এ ম্যাচটি শুরু হবে রোববার রাত সাড়ে ৮টায়। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই যেন চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে দর্শকদের বিনোদনের চাহিদা পূরণ। আধুনিক ক্রিকেটে অন্য দুই সংস্করণের চেয়ে টি-টোয়েন্টিই এখন দর্শকদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। তাই ক্রিকেটের মারকাটারি এ সংস্করণের বিশ্বকাপ এলেই দেশে দেশে বেজে ওঠে দামামা; দেখা মেলে নানা আয়োজন, উৎসাহ ও উদ্দীপনা। আয়োজক দেশগুলোতে সেটা আরও বেশি নজর কাড়ে।

২০০৭ সাল থেকে মাঠে গড়াচ্ছে টি-টোয়ন্টি বিশ্বকাপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর যুক্তরাষ্ট্রে বসছে বৈশ্বিক এ টুর্নামেন্টের নবম আসর। টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে সেজেছে আয়োজক দেশ দুটি।

এবারই প্রথমবারের মতো ২০ দল নিয়ে আয়োজন হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। যেটি যেকোনো আইসিসি ইভেন্টে সবচেয়ে বেশি দেশের অংশগ্রহণও। এবারের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পেয়েছে ১২টি দেশ। বাকি ৮টি দেশকে আসতে হয়েছে বাছাইপর্ব পেরিয়ে। মূলপর্বে উত্তীর্ণ ২০টি দলকে ৪টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে, যেখানে প্রতি গ্রুপে ৫টি করে দল রয়েছে।

দল বাড়ায় পরিবর্তন এসেছে নিয়মেও। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সুপার এইট পর্বে কোয়ালিফাই করবে। যে আটটি দল সুপার এইটে কোয়ালিফাই করবে তাদের আবার দুটি গ্রুপে ভাগ করা হবে। সেখান একে অপরের বিরুদ্ধে খেলবে সবকটি দল। তারপর সেখান থেকে পয়েন্ট ও রানরেটের বিচারে ২টি করে দল পৌঁছবে সেমিফাইনালে। তারপর দুটি দল পৌঁছবে মেগা ফাইনালে।

লিগ পর্বে কোনো ম্যাচে বৃষ্টি হলে কমপক্ষে ৫ ওভার করে খেলা হলেই ফলাফল পাওয়া যাবে। নকআউট পর্বে সেটা ১০ ওভার। আর লিগ পর্বে খেলা ভেস্তে গেলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে। সেমিফাইনালে একটি ম্যাচে থাকছে রিজার্ভ ডে। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে থাকছে না রিজার্ভ ডে। তবে অতিরিক্ত ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করা হবে।

বিশ্বকাপে গ্রুপ অব ডেথ-খ্যাত ‘ডি’ গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। গ্রুপ ‘এ’-তে রয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত-পাকিস্তান। তাদের সঙ্গী আয়ারল্যান্ড, স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। ‘বি’ গ্রুপে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড ও ওমান খেলবে। আর ‘সি’ গ্রুপে আছে নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান, উগান্ডা ও পাপুয়া নিউগিনি।

সবমিলিয়ে ৯টি (যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ছয়টি) ভেন্যুতে হবে এবারের বিশ্বকাপ। ২৯ দিনব্যাপী চলা এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল হবে আগামী ২৯ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজে। গ্রুপ পর্বসহ এবার বিশ্বকাপে সর্বমোট ৫৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে গ্রুপপর্বে হবে ৪০টি ম্যাচ, সুপার এইট পর্বে ১২টি ম্যাচ; এ ছাড়াও দুটি সেমিফাইনাল ও একটি ফাইনাল ম্যাচ রয়েছে।

বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে ৭ জুন, ডালাসের ম্যাচটিতে তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা।


পারফেক্ট অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের বোলারদের নাভিশ্বাস তোলার পর বল হাতে চেপে ধরা; বোনাস হিসেবে ফিল্ডিংয়ে দারুণ কিছু করা। একজন অলরাউন্ডারের এ কাজগুলো বেশ ভালোভাবেই সামাল দিতে পারেন ভারতের সহঅধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। বারবার সেটার প্রমাণও দিয়েছেন তিনি। হারের চোখ রাঙানি থেকে অনেক ম্যাচ বের করে এনেছেন তিনি। নিজের প্রতিভার জানান দিয়েই স্থায়ী হয়েছেন দলে। ক্রিকেটে বিশ্বে নিজেকে পরিচিত করেছেন একজন জাত অলরাউন্ডার হিসেবে।

ভারত দলে হার্দিক পান্ডিয়া অপরিহার্য নাম। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ চালু আছে, যা ‘টিআইএনএ’ নামে পরিচিত। অর্থাৎ ‘দেয়ার ইজ নো অলটারনেটিভ’। সোজা বাংলায় ‘এর কোনো বিকল্প নেই’। হার্দিক পান্ডিয়ার ক্ষেত্রে যেন এই প্রবাদ ষোলো আনাই প্রযোজ্য। তার কোনো বিকল্পই খুঁজে পান না ভারতের নির্বাচকরা।

১৯৯৩ সালে ভারতের গুজরাট প্রদেশে জন্ম হার্দিক পান্ডিয়ার। বাবা ছিলেন ছোট একজন ব্যবসায়ী। কিন্তু স্বপ্ন ছিল দুই ছেলেকেই বানাবেন ক্রিকেটার। সে জন্য ব্যবসা গুটিয়ে চলে আসেন বরদোরা শহরে। দুই ছেলে ক্রুনাল পান্ডিয়া আর হার্দিক পান্ডিয়াকে ভর্তি করে দেন কিরণ মোরের একাডেমিতে। সেখান থেকেই ভারতের আজকের ম্যাচ জয়ের নায়ক কিংবা সেরা অলরাউন্ডার।

ছোটবেলায় অনেকটা রগচটা ছিলেন পান্ডিয়া। সে জন্য পারফর্ম করলেও জায়গা হয়নি রাজ্যদলে। ক্যারিয়ারের শুরুতে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ছিলেন একজন লেগস্পিনার। কিন্তু সে সময়ের একাডেমি কোচ পান্ডিয়ার মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন বিশেষ কিছু। পান্ডিয়াকে পরামর্শ দেন পেস বোলিং করার। সেখান থেকেই শুরু।

২০১৩ সালে ইউসুফ পাঠানের এর নেতৃত্বে বরোদা ক্রিকেট দলের হয়ে ক্রিকেট জীবনে অভিষেক পান্ডিয়ার। ২০১৩-১৪ মৌসুমে বরোদা দলের হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি জয়ে ছিল ডানহাতি এ অলরাউন্ডারের গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

পান্ডিয়া প্রথমবার আলোচনায় আসেন ২০১৫ সালের আইপিএল দিয়ে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে সে বছর বাইশ গজে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। সেটার পুরস্কার পেতেও দেরি হয়নি। পরের বছরই অভিষেক হয় ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। ২০১৭ সালে অভিষেক হয় টেস্ট ক্রিকেটেও।

পুরো নাম: হার্দিক হিমাংশু পান্ডিয়া

জন্ম: ১১ অক্টোবর, ১৯৯৩

জন্মস্থান সুরাট, গুজরাট, ভারত

রাশি: তুলা

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট, ক্যারম

প্রিয় খাবার: গুজরাটি খাবার

প্রিয় পানীয়: হরলিক্স

প্রিয় রং: সাদা

প্রিয় ক্রিকেটার: শচীন টেন্ডুলকার, যুবরাজ সিং

প্রিয় ক্রিকেট দল: ভারত ক্রিকেট দল

প্রিয় সতীর্থ: কে এল রাহুল, যুবেন্দ্র চাহাল।

প্রিয় ফুটবলার: জিনেদিন জিদান।

প্রিয় ফুটবল দল: রিয়াল মাদ্রিদ সিএফ।

প্রিয় গাড়ি: মার্সিডিজ জি৬৩

প্রিয় স্টেডিয়াম: ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম, ভারত

প্রিয় স্থান: দুবাই

প্রিয় শখ: রান্না করা, ভ্রমণ, গান শোনা

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: আরিত্ত


পঞ্চম শিরোপার স্বপ্নে আদিল রশিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

একজন খেলোয়াড়ের কিংবদন্তি হওয়ার পেছনে অনেকাংশেই নির্ভর করে দেশের হয়ে একটি বিশ্বকাপ ট্রফি জয়। লম্বা ক্যারিয়ারে কেউ কেউ দেখা পান এক বা একাধিক শিরোপার। আবার কারও ক্যারিয়ার শেষ হয় খালি হাতেই। শোকেসে একাধিক শিরোপা রাখা কিংবদন্তিদের সংখ্যা খুব একটা বেশি না। কিন্তু এরপরও থামতে চান না তারা।

সেই দলেই আছেন ইংল্যান্ডের দুইবারে বিশ্বকাপজয়ী তারকা আদিল রশিদ। ইংলিশদের জার্সিতে এ লেগ স্পিনার স্বাদ নিয়েছেন ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। তিনি স্বপ্ন দেখেন তিনটি, চারটি কিংবা পাঁচটি বিশ্বকাপ জয়ের!

সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সাদা বলে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৩০৭ উইকেট) স্পিনার। সাক্ষাৎকারে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন রশিদ।

আদিল রশিদ বলেন, ‘যত দিন আমি ফিট ও (উইকেটের জন্য) ক্ষুধার্ত থাকব, তত দিন খেলা চালিয়ে যাব। আমি শুধু দুটি বিশ্বকাপ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চাই না। আমার স্বপ্ন ও লক্ষ্য তিনটি, চারটি কিংবা পাঁচটি বিশ্বকাপ জেতা।’

বয়সটা ৩৬ পেরিয়ে ৩৭ ছুঁই ছুঁই। রশিদের ক্যারিয়ারও তাই দাঁড়িয়েছে সায়াহ্নে এসে। ইংল্যান্ডের মতো দলে যে খুব বেশি সুযোগ আসবে না, সেটা ভালো করেই জানে রশিদ। তবে দলের জন্য সবসময়ই তৈরি আছেন তিনি। এ লেগস্পিনার বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, ক্যারিয়ারে এমন সুযোগ বারবার আসে না। তাই ইংল্যান্ড যদি মনে করে দলে আমাকে প্রয়োজন, আমি তৈরি আছি। আমার (আন্তর্জাতিক) ক্যারিয়ার আরও পাঁচ বছর লম্বা হতে পারে আবার এক বছরও হতে পারে। তবে আমার লক্ষ্য যত দিন সম্ভব খেলা চালিয়ে যাওয়া।’

গত বছর ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ধরে রাখার অভিযানে গিয়ে ভরাডুবি হয়েছিল ইংল্যান্ডের। ৯ ম্যাচের ৬টিতেই হেরে প্রথম পর্ব থেকে বাদ পড়ে ইংলিশরা। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ব্যর্থতা নিয়ে রশিদ বলেছেন, ‘এ নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ নেই। সত্যি কথা, আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি এবং আমাদের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি ছিল।’

টি-টোয়েন্টির বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। শিরোপা ধরে রাখার মিশনেই ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্চে উড়াল দেবে তারা। সংস্করণ আলাদা হওয়ার কারণেই এবার ভালো করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী রশিদ, ‘দেখুন, এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন সংস্করণ, দুই বছরের কম সময় আগে আমরা যেটিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমার বিশ্বাস, এবারের দলটা ২০২২ বিশ্বকাপজয়ী দলের চেয়েও শক্তিশালী। এই দলের ১৫ জনই ম্যাচ জেতানো খেলোয়াড়। জফরা আর্চারের ফেরাটা বড় ব্যাপার।’


banner close